অর্গানিক পণ্য
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে, বিষমুক্ত খাদ্য শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য বিষমুক্ত অর্গানিক পণ্য একটি বিলাসিতা মনে হয়। আমরা গ্রাম পর্যায় থেকে আমাদের তত্ত্বাবধানে চাষ করা বিভিন্ন অর্গানিক পণ্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবো, যাতে তারা স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন। আমাদের এই পণ্যগুলোর মূল্য বাজারের বিদ্যমান একই ধরনের পণ্যের তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ কম হবে, যা নিঃসন্দেহে অল্প আয়ের মানুষের দুঃখ-কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করবে।
জৈব খাদ্য বা অর্গানিক ফুড হলো সেই সব খাবার যা উৎপাদনে কোনো ধরনের রাসায়নিক সার, অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। জৈব সার ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত খাদ্য হল জৈব খাদ্য। যেসব পণ্য উৎপাদনে সহনীয় মাত্রায় নির্দিষ্ট সময়ে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে নিরাপদ খাদ্য বা সেইফ ফুড বলা হয়।
জৈব খাদ্য
সবজি চাষে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। এছাড়া হাইব্রিড ও জিএমও জাত উৎপাদন করে জমি ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষিজমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার আমাদের খাবারের মধ্যে ঢুকে যায়। গবাদি পশু-পাখির উৎপাদন বাড়াতে হরমোন দেওয়া হয়। শুধু সবজি নয়, ফল, ডিম, মাছ, মাংস—সবকিছুতেই জীবনকাল বাড়ানোর জন্য ফরমালিন কিংবা কীটনাশক মেশানো হয় যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া ফলমূল পাকাতে বা পচে যাওয়া ঠেকাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ধোয়ার পর এমনকি রান্না করার পরও সম্পূর্ণ দূর হয় না। এই রাসায়নিক পদার্থগুলো আমাদের শরীরের নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং ধীরগতিতে বিষের মতো কাজ করে।
কৃত্রিম সার, রাসায়নিক দ্রব্য, ফরমালিন ইত্যাদির যথেচ্ছ ব্যবহারে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্যা ইত্যাদির প্রকোপ মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের ওপর এর প্রভাব আরও মারাত্মক। এই ক্ষতিকর দিক থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম সমাধান হতে পারে অর্গানিক সবজি। অর্গানিক শাকসবজি বা শস্য উৎপাদনে কোনো ধরনের রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। জমিতে বীজ বপনের আগে কয়েক বছর জমি ফেলে রেখে মাটি পরিশুদ্ধ করে নেওয়া হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
ফলে সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা প্রদান করবো স্বল্পমূল্যের নিরাপদ খাদ্য।